রাজনীতির মাঠে তীব্র উত্তেজনা, নির্বাচন ঘিরে মার্কিন উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর, মুজিব সিনেমার মুক্তি, দুর্গাপূজা এবং ফিলিস্তিনি সংকটের খবরে পুরো সপ্তাহটি ছিল বেশ সরব।
‘ঢাকা অবরোধে এলে শাপলা চত্বরের চেয়ে করুণ পরিণতি হবে বিএনপির’
ঢাকা অবরোধ করলে বিএনপির পরিণতি শাপলা চত্বরের থেকেও করুণ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে যুবলীগের এক সমাবেশে তিনি বলেন, “মির্জা ফখরুল ক্ষমতা দখল করার জন্য নেতাকর্মীদের অতিরিক্ত কাপড় নিয়ে ঢাকা আসতে বলেছেন। ১৮ তারিখ ঢাকা শহরে লোক জমায়েত করবে, অবরোধ করবে। এই শহরের সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা অবরোধ করার কর্মসূচি তারা দিয়েছে। ১৮ অক্টোবরকে সামনে রেখে বিএনপি তাদের নেতাকর্মীদের ঢাকা আনতে শুরু করেছে। হোটেল খালি নেই। সব সিট তারা বুক করে ফেলেছে। নতুন বাড়ির খালি ফ্ল্যাট বুক করেছে। তো আমরা কি দাঁড়িয়ে ললিপপ খাবো? আমরাও প্রস্তুত আছি। অবরোধ করলে বিএনপি অবরোধ হয়ে যাবে। খেলা হবে। বিএনপির পরিণতি শাপলা চত্বরের থেকেও করুণ হবে। শেখ হাসিনা মাথা নত করবে না।” (১৬ অক্টোবর/ঢাকা ট্রিবিউন)
সংলাপের শর্ত নাকচ, নেতাকর্মীদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান ফখরুলের
ঢাকায় সফরে আসা মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশের রাজনৈতিকদের প্রতি ৫টি সুপারিশ দিয়েছে। সেখানে প্রধান আলোচ্য ছিল সংলাপ। সংলাপের বিষয়ে আগে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, কোনো ধরনের সংলাপের সুযোগ নেই। বিএনপি সংলাপের পথ বন্ধ করেছে। মার্কিন প্রতিনিধি দলের সুপারিশের পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ বিএনপি যেসব শর্ত দিয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহার করা হলে সংলাপের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।”
আওয়ামী লীগের এই শর্ত নাকচ করে দিয়েছে বিএনপি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল একটা বিবৃতি দিয়েছেন। এ বিবৃতির প্রধান কথা সংলাপ। সেটার জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘আমরা তখনই আলোচনায় বসতে রাজি আছি, যখন বিএনপি সমস্ত শর্ত বাদ দিয়ে আলোচনা আসবে।’ আমার প্রশ্ন, আপনারা কি সাংবিধানিকভাবে বৈধ? এটা আপনাদের প্রমাণ করতে হবে। সবার আগে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে।”
তিনি নেতাকর্মীদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “কথা একটাই, আমরা আমাদের জীবন দিয়ে লড়াই করছি, অনেক ভাই চলে গেছে, প্রাণ দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে; আমাদের অনেক মা-বোনের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে, আমাদের অনেক সন্তান পিতৃহারা হয়েছে, অনেক মা সন্তানহারা হয়েছে, আমাদের পেছনে ফিরে তাকানোর কোনো সময় নেই।” (১৬ অক্টোবর/বিডিনিউজ)
বিএনপির মহাসমাবেশ
আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এই মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে কঠোর কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিএনপি। এই মাহাসমাবেশের আগে পূজার ছুটির মধ্যে সরকারকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিতে সময়সীমা বেঁধে দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
প্রতিহত করার ঘোষণা আওয়ামী লীগের
আওয়ামী লীগ বিএনপির এই কর্মসূচিতে বেশ আমলে নিয়েছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মাঠের রাজনীতিতে পুরোপুরি সক্রিয় বিএনপি। দলটি শান্তিপূর্ণভাবে এসব কর্মসূচি পালন করছে। বাংলাদেশের সহিংস রাজনীতির সংস্কৃতির পরিবর্তন করেছে দলটি। ফলে বিএনপির আগামী ২৮ অক্টোবরের “শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশকে” আওয়ামী লীগ নানাভাবে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আন্দোলনের নামে বিএনপি, জামায়াত এবং আরও অনেকেই মাঠে নামতে চায়। আন্দোলন করুন, আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। কিন্তু তারা যদি আবার ওই রকম অগ্নিসন্ত্রাস, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করে আমরা কিন্তু ছেড়ে দেবো না। এটা বাস্তবতা।” (২১ অক্টোবর/আজকের পত্রিকা)।
গত বছরের অক্টোবরে মাঠে পুরোপুরি সক্রিয় হওয়া বিএনপি এ পর্যন্ত কোনো সংঘাতময় কর্মসূচি দেয়নি। গত বছরের ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে, এরপর ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশালে, ১২ নভেম্বর ফরিদপুরে (বিএনপির সাংগঠনিক বিভাগ), ১৯ নভেম্বর সিলেটে, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায়, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণসমাবেশ করে দলটি। আর এসব গণসমাবেশের ভেতর দিয়ে দেশজুড়ে নেতাকর্মীদের মাঠে নামায় তারা। এরপর থেকে পদযাত্রা, তারুণ্যের সমাবেশ, অবস্থান কর্মসূচি, কনভেনশনসহ নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করেছে তবে হরতাল-ধর্মঘাটের মতো কোনো কর্মসূচি দেয়নি তারা।
পুলিশের নজরদারি
বিএনপির আন্দোলনকে ঘিরে বাড়তি নজরদারি বাড়ানো ও পুলিশের পক্ষ থেকে “সহিংসতা” দমনের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, “বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। বাংলাদেশের সংবিধানে যেকোনো রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক আন্দোলন, মিছিল-মিটিং সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে পুলিশ নিরাপত্তাও দিয়ে থাকে। কিন্তু ২৮ অক্টোবর কর্মসূচির আড়ালে যদি কেউ সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টা করে, ঢাকা ২ কোটি ২৪ লাখ মানুষের জানমালের নিরাপত্তার শঙ্কা দেখা দেয়, ডিএমপি তা কঠোর হস্তে দমন করবে।” (২১ অক্টোবর/প্রথম আলো)
ফাঁদে পা দেবে না বিএনপি
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও পুলিশ বিএনপির সমাবেশে সহিংসতার শঙ্কা করলেও বিএনপি বলছে ভিন্ন কথা। বিএনপি মনে করে, সরকার ও পুলিশ এসব কথার মধ্য দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করার উসকানি দিচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, “সরকার যাতে কোন উস্কানি দিয়ে কোন সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে এবং বিএনপির কোন পর্যায়ের কেউ যাতে এমন ফাঁদে পা না দেয়, সেটিই নিশ্চিত করতে চাচ্ছি আমরা। মহাসমাবেশটি হবে শান্তিপূর্ণ। সারাদেশ থেকে আমাদের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা জেল, জুলুম, মামলা, হামলাকে অগ্রাহ্য করেই ঢাকায় আসবেন। সরকারও অতীতের মতো চাইবে উস্কানি দিয়ে সংঘাত সহিংসতা ঘটিয়ে বিএনপির ওপর দোষ চাপাতে। তা নিয়ে সতর্ক থেকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে দেওয়া হয়েছে।”
অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
১৬ অক্টোবর ঢাকায় আসেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আখতার। এদিন পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন। বৈঠকে আফরিন আখতার বাংলাদেশের মানুষ যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে তাগিদ দেন। (১৬ অক্টোবর/আমাদের সময়)
সহিংস হতে পারে নির্বাচন, আসতে পারে নিষেধাজ্ঞা
বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমে সংঘাতের দিকে যেতে পারে বলে মনে করছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ। তারা বলছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পদত্যাগের দাবি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার উপেক্ষা করবে বলে মনে হচ্ছে। একই সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিও উপেক্ষা করবে তারা। পক্ষান্তরে তারা বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে দমনপীড়ন চালাবে।”
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ আরও বলছে, আগামী জানুয়ারির নির্বাচনের আগে অথবা পরে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। জালিয়াতির বা বিতর্কিত নির্বাচন হলে তাতে তীব্র সরকারবিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ হতে পারে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র (এবং পশ্চিমা অন্য দেশগুলো) যেহেতু নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে (এর মধ্যে থাকতে পারেন সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা), তাই সরকার অধিক পরিমাণে ভারত ও চীনের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্রোহ নতুন করে দেখা দেওয়ার শঙ্কাও করছে গ্রুপটি। তারা বলছে, “কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে সরকারের অস্ত্রবিরতি চুক্তির মর্যাদা অনিশ্চিত। বিদ্রোহী সশস্ত্র শক্তির বিরুদ্ধে সহিংসতা অব্যাহত থাকতে পারে এই গ্রুপটির। পার্বত্য চট্টগ্রামে কথিত নতুন ইসলামপন্থি গ্রুপ জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার। তাদেরকে নিষ্ক্রিয় করতে অভিযান বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাবে। (২১ অক্টোবর/মানবজমিন)
৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মুজিব সিনেমা মুক্তি
গত ১৩ অক্টোবর সারাদেশে মুক্তি পায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক “মুজিব: একটি জাতির রূপকার”। ৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সিনেমাটির প্রযোজনায় রয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। বাংলাদেশ মোট অর্থের ৫০ কোটি ও ভারত ৩৩ কোটি টাকা দিয়েছে। ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি এ বায়োপিকের শুটিং শুরু হয় ভারতের মুম্বাই ফিল্ম সিটিতে। শেষ হয় একই বছরের ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশে।
এ বছরের ৩১ জুলাই দুই দেশের সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পায় সিনেমাটি। আগামী ২৭ অক্টোবর ভারতে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
সিনেমাটি শেখ মুজিবের বায়োপিক। শেখ ফজিলাতুন্নেসার বয়ানে সিনেমায় উপস্থাপিত মুজিব পারিবারিক চরিত্র। তবে এতে রাজনীতির অংশও আছে। নির্মাতা পারিবারিক মুজিবকে ফোকাস করেছেন। সিনেমাটির স্ক্রিপ্ট সংশোধন করেছেন শেখ হাসিনা। ফজিলাতুন্নেসার বয়ানটিও অনেকটা শেখ হাসিনার ভাষ্যে তৈরি হওয়া। সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন শ্যাম বেনেগাল।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন নিরীহ গ্রামের মেয়ে, যিনি তার স্বামীকে রাজনীতিতে আসতে দিতে চান না- সেখান থেকে ফজিলাতুন্নেসা মুজিব কীভাবে ধীরে ধীরে বঙ্গবন্ধুর সার্থক অর্ধাঙ্গিনী হয়ে উঠেছিলেন সেটিই মুখ্য বিষয় হিসেবে চলচ্চিত্রটিতে তুলে ধরা হয়েছে। (বিবিসি বাংলা)
সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ। ফজিলাতুননেছা মুজিবের চরিত্রে রয়েছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা, শেখ হাসিনার চরিত্রে নুসরাত ফারিয়া, আর তাজউদ্দীন আহমদের চরিত্রে রিয়াজ আহমেদ।
অন্যান্য চরিত্রে করেছেন দিলারা জামান, চঞ্চল চৌধুরী, সিয়াম আহমেদ, জায়েদ খান, খায়রুল আলম সবুজ, ফেরদৌস আহমেদ, দীঘি, রাইসুল ইসলাম আসাদ, গাজী রাকায়েত, তৌকীর আহমেদ ও মিশা সওদাগরসহ দেশের শতাধিক অভিনয় শিল্পী।
মদমুক্ত দুর্গাপূজা, রানা দাশগুপ্তদের মিছিলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলা
গত ৪ অক্টোবর মদ খেয়ে মণ্ডপে নাচানাচি না করে “মাদকমুক্ত” পূজা আয়োজনের আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের কুমিল্লার সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।
তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদে ১৩ কুমিল্লায় বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। ওই মিছিলে সরকার সমর্থক যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ‘হামলা’ চালায়। পুলিশের বিরুদ্ধেও মিছিলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
মিছিলে যুবলীগ-ছাত্রলীগের হামলার বিষয়ে গভীর উদ্বেগে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০ অক্টোবর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, “কুমিল্লায় সহিংসতার ঘটনাটি আওয়ামী লীগ খতিয়ে দেখছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে নিজেই খোঁজখবর নিয়েছেন। দল থেকে গোটা ব্যাপারটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেউ অপকর্ম করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” (২০ অক্টোবর/বাসস)
তিন মাসে কর্মসংস্থান কমেছে ৪ লাখ
বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকট, মূল্যস্ফীতি ও ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ চাপে পড়ায় দেশে তিন মাসে কর্মসংস্থান কমেছে প্রায় ৪ লাখ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ত্রৈমাসিক জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) কাজে নিয়োজিত মানুষের সংখ্যা ছিল ৭ কোটি ১১ লাখ। দ্বিতীয় প্রান্তিক (এপ্রিল-জুন) শেষে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজারে। তিন মাসের ব্যবধানে কর্মসংস্থান কমেছে ৩ লাখ ৯০ হাজার মানুষের।
বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কর্মসংস্থান হারানোদের মধ্যে সিংহভাগই নারী, যার সংখ্যা ৩ লাখ ৭০ হাজার। কর্মসংস্থান হারানো পুরুষের সংখ্যা ২০ হাজার। (২১ অক্টোবর/বণিক বার্তা)
সরকার কর্মসংস্থান ধরে রাখার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে মনে করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।
তিনি বলেছেন, “রিজার্ভ সংকট প্রবৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে সংকুচিত করে ফেলেছে। এর প্রভাবে কর্মসংস্থান কমছে। আর এটি দারিদ্র্যের বিষয়টিকেও আরো গভীর করছে। এখানে কর্মসংস্থান ধরে রাখার বিষয়টিকে সে অর্থে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। এ অবস্থায় সরকারের সার্বিক নীতিকৌশল পুনরায় পর্যালোচনা করে দেখা জরুরি।”
শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে চীনে পুতিন
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের যুগান্তকারী বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পের দশম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বেইজিংয়ে এক সম্মেলনে অংশ নেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের নৃশংসতা চলার সময় দুই পরাশক্তি রাশিয়া-চীনের রাষ্ট্রপ্রধানের সাক্ষাৎ ও বৈঠক বেশ গুরুত্বসহকারে প্রচার করা হয় দেশি বিদেশি সংবাদমাধ্যমে।
তবে বিআরআইয়ের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের কেউ এই সম্মেলনে অংশ নেননি। এর আগে ব্রিকস’র সদস্য না হয়েও দক্ষিণ আফ্রিকার সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতে জি-২০ এর সম্মেলনেও অংশ নেন তিনি। জি-২০ ভুক্ত দেশ নয় বাংলাদেশ।
গাজায় ২০ ট্রাক ত্রাণ
ইসরায়েলি হামলা শুরুর প্রায় দুই সপ্তাহ পর ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে থাকা গাজায় ত্রাণ ঢোকার অনুমতি দেয় ইসরায়েল। ২১ অক্টোবর মিশরের রাফাহ ক্রসিং দিয়ে ওষুধ ও খাবার নিয়ে ২০টি ত্রাণবাহী ট্রাক অবরুদ্ধ গাজায় ঢোকে।
গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অনবরত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৪,৩০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১০ লাখের বেশি মানুষ। খাবার, পানি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, ওষুধের অভাবে ভয়াবহ মানবিক সংকটে রয়েছে গাজা। এ অবস্থায় এত কম ত্রাণ সহায়তাকে লোক দেখানো বলে মনে করছে মানবাধিকার ও সাহায্য সংস্থাগুলো।
Discussion about this post