এশিয়ার বহু দেশের রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রকে বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ভারতীয় উপমহাদেশের তিনটি দেশেও পরিবারতন্ত্রকে বড় সমস্যা বলে মনে করেন এখানকার বিদ্বৎ সমাজ। অনেকেই মনে করেন, রাজনীতি যদি ভিন্ন ধারায় প্রবাহিত হয়, জনসাধারণকে যদি উপযুক্ত দল ও নেতা বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, রাজনৈতিক দলগুলোতে যদি গণতান্ত্রিক চর্চার পরিবেশ তৈরি করা যায় তবে হয়তো পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি থেকে দেশগুলো বেরিয়ে আসতে পারবে।
আসলে কি তাই?
উপমহাদেশের ইতিহাস কী বলে?
এখানে পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টাগুলো কি সফল হয়েছে?
আর সেই চেষ্টাগুলোর ধরনই বা কেমন?
পাকিস্তানে ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রায় এক মেয়াদ এবং ভারতে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) শাসনের দুই মেয়াদ শেষে এ বিষয়ে একটি মূল্যায়নের সময় এসেছে। এই দুটি দলের উত্থানকে উপমহাদেশে পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির বিকল্প হিসেবে দেখা হয়। সেদিক থেকে দল দুটির ক্রমবিকাশ পর্যবেক্ষণ করা খুবই জরুরি।
রাজনীতিতে নাম লেখানোর আগে ইমরান খান পাকিস্তানে ক্রিকেটার হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন। সকলেই তাকে চিনতো, জানতো এবং ভালোবাসতো। রাজনীতিতে আসার আগে তিনি জনহিতকর ও দাতব্য কাজে নিজেকে যুক্ত করেছিলেন। এসব কাজের মধ্য দিয়ে সাধারণ জনগণের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলেছিলেন। হয়তো রাজনীতিতে আসার ইচ্ছা তার শুরু থেকেই ছিল এবং বিকল্প রাজনীতি দাঁড় করানোর গোপন ইচ্ছাও ছিল। সে কারণেই মুসলিম লীগ থেকে ডাক পাওয়ার পরও তিনি দলটিতে যোগ দেননি। নিজের একটি দল গড়ে তুলেছেন। প্রাথমিকভাবে সাফল্য পাওয়ার পরেও দলটি পাকিস্তানের ক্ষমতায় যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেনি। বলা হয়ে থাকে, পাকিস্তান রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী সামরিক বাহিনীর সহায়তায় তেহরিক-ই-ইনসাফ ক্ষমতায় আসতে পেরেছিল। এবং সরকারের মেয়াদ শেষের আগে সামরিক বাহিনী সমর্থন প্রত্যাহার করে নিলে তাকে ক্ষমতা থেকে চলেও যেতে হয়েছে। সামরিক বাহিনীর সঙ্গে তিনি বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন এবং শেষে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করলে সামরিক স্ট্যাবলিশমেন্ট তাকে সরিয়ে দেওয়ার যুক্তি খুঁজে পায়। তবে তার অপসারণের ক্ষেত্রে সামরিক হস্তক্ষেপের কোনো ঘটনা ঘটেনি। দৃশ্যত গণতান্ত্রিক উপায়ে সংসদের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করা হয়।
ক্ষমতা থেকে চলে গেলেও ইমরান খান পাকিস্তান জুড়ে তীব্র প্রতিরোধ আন্দোলনের ডাক দিতে পেরেছিলেন। বোঝা গিয়েছিল, সামরিক বাহিনীর সমর্থনে ক্ষমতায় এলেও তার নিজের একটা জনভিত্তি আছে, তার দলও যথেষ্ট জনপ্রিয়।
ইমরানের আগে প্রায় ৭ দশকের ইতিহাসে পাকিস্তান ঘুরপাক খেয়েছে প্রধানত দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে। পাকিস্তান মুসলিম লীগ ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি মূলত পরিবারতান্ত্রিক দুটি দল। সামরিক বাহিনী বেশিরভাগ সময় পাকিস্তান শাসন করলেও যখনই নির্বাচন হয়েছে তখনই কোনো না কোনোভাবে এই দুটি দলের একটি জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছে। এমনকি সামরিক বাহিনীর শাসকরাও ক্ষমতা দখল করার পর দীর্ঘ মেয়াদে শাসন পরিচালনা করার স্বার্থে কয়েক দফা পাকিস্তান মুসলিম লীগকে ব্যবহার করেছেন। দলটির নেতৃত্ব দখল করে তারা শাসন অব্যাহত রেখেছেন। সব শেষ পারভেজ মোশাররফের ১০ বছরের শাসনামলের কথা বলা যায়। তিনিও মুসলিম লীগের ওপর সওয়ার হয়েছিলেন। অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী মুসলিম লীগ ও পিপলস পার্টির বিকল্প কোনো রাজনৈতিক দল গড়ে তুলতে পারেনি।
তাহলে ইমরান খান কীভাবে সেটি করতে পারলেন?
তিনি অবশ্যই জনপ্রিয় ক্রিকেটার ছিলেন। কিন্তু রাজনীতিতে সেই জনপ্রিয়তার পুরোটা কাজে লেগেছে বলে মনে হয় না। রাজনীতিতে সফল হতে ইমরান মূলত পপুলিস্ট ইসলামিক রাজনীতির দিকে ঝুঁকেছেন। পাকিস্তানের মুসলিম ভোটারদের সমর্থন আদায়ের জন্য তিনি বারবার ইসলামপন্থী রাজনৈতিক ভাষ্য উচ্চারণ করেছেন। এই রাজনীতির অনুষঙ্গ হিসেবে তিনি সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতা, খোলাখুলি পাকিস্তান ও আফগািনস্তানে মার্কিন নীতির বিরোধিতা করেছেন। অনেকেই খেয়াল করে থাকবেন, তিনি তার স্ত্রীর পীরত্বকেও ব্যবহার করেছেন। নানাভাবে দেখাতে চেষ্টা করেছেন তিনি একজন মুসলিম জাতীয়তাবাদী নেতা। বক্তব্যে তিনি অহরহ মদিনা সনদের কথা উল্লেখ করতেন। এরকম আরো অনেক উদাহরণ দেওয়া যাবে, যাতে স্পষ্ট বোঝা যায়, ইমরান খান মূলত ধর্মীয় আবেগ ব্যবহার করে জনপ্রিয়তা পাওয়ার চেষ্টা করেছেন।
পাকিস্তানের ইমরান খানের সঙ্গে ভারতের নরেন্দ্র মোদীর গল্প পুরোটা মিলবে না। ইমরান খান যেমন অল্প সময়ের মধ্যে সাফল্য পেয়েছেন তেমনটি বিজেপির ক্ষেত্রে ঘটেনি। ইমরান খান ২০ বছর সময়ের মধ্যে ক্ষমতার স্বাদ পেলেও বিজেপিকে অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর। বিজেপির মাতৃসংগঠন আরএসএস বা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের জন্ম অবশ্য ১৯২৫ সালে, বহু ভারতের স্বাধীনতার আগে।
দ্বিতীয় দফার সাফল্য হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি দুই মেয়াদে ভারতের শাসন ক্ষমতা আছে। ভারতের রাজনীতিতে যে বিষয়টি আগে কখনো কল্পনাও করা যেত না সে ঘটনাটিও বিজেপি ঘটিয়েছে। তারা ভারতীয় ন্যাশনাল কংগ্রেসের বিকল্প হিসেবে সারাদেশে দেশে সংগঠনের বিস্তার ঘটিয়েছে। মাঝে কংগ্রেসের দুর্বলতার কারণে বিভিন্ন রাজ্যে যেভাবে আঞ্চলিক দলগুলোর উত্থান ঘটছিল তাতে মনে হচ্ছিল ভারতে সর্বভারতীয় দলের বদলে আঞ্চলিক রাজনীতির ধারাটাই শক্তিশালী হবে। কিন্তু বিজেপির উত্থানে সে পূর্বাভাস সত্যি হয়নি। বিজেপি বহু রাজ্যে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর বিকল্প শক্তিশালী হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলটির এই সর্বগ্রাসী উত্থানের মধ্য দিয়ে কংগ্রেসের পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি থেকে ভারত বেরিয়ে এসেছে সত্যি, কিন্তু দেশটি প্রবেশ করেছে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির এক অনন্তচক্রে। হিন্দুত্ববাদ বিজেপির রাজনীতির প্রধান হাতিয়ার হওয়ায় তারা দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক চর্চার মধ্য দিয়ে জনসমাজের গভীরে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি সেঁধিয়ে দিতে পেরেছে। ভারতীয় সমাজ এর মধ্য দিয়ে যে ক্ষতির মধ্যে পড়েছে তা থেকে বের হতে তাদের অনেক কষ্ট করতে হবে। অথবা কখনোই এ থেকে বের হতে পারবে না। সবচেয়ে বড় কথা, বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে বিকল্প রাজনৈতিক দলগুলোকে অনেক কষ্ট করতে হবে। ভাগ্যক্রমে বিজেপি ক্ষমতা থেকে গেলেও রাজনীতিতে মুখ্য ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে। ভারতীয় রাজনীতি থেকে বিজেপির হিন্দুত্ববাদী দর্শনের প্রভাব সহজে মোছা যাবে না।
অথাৎ, আমাদের প্রতিবেশী দুটি দেশে পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি থেকে উত্তরণের প্রচেষ্টা সুখকর তো হলোই না, বরং হিতে বিপরীত হয়ে গেল। এখন তর্কের খাতিরে বলি, বিজেপি বা পিটিআই যদি ধর্মভিত্তিক রাজনীতি না করতো তবে কি পরিবারতন্ত্রের বাইরে কোনো ভালো রাজনীতি বা রাজনৈতিক দল দাঁড়াতে পারতো? অবশ্যই এমন রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল দাঁড়াতে পারতো। কিন্তু সেই দল ক্ষমতায় আসতে পারতো না। ক্ষমতায় আসার জন্য যে জনসমর্থন দরকার তা উপমহাদেশে এতদিন পরিবারতান্ত্রিক দলগুলোই শুধু সংগ্রহ করতে পেরেছে। ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর মাধ্যমে এই দলগুলোর নেতাদের জনপ্রিয়তা তৈরি হয়েছে। এমনকি দলগুলোর নেতাদের মানুষ সপরিবারের পছন্দ করে। তাদের গল্পগুলো প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত ও সঞ্চারিত হয়। একটা কাল্ট সিস্টেমের মধ্য দিয়ে এদের সমর্থকগোষ্ঠী তৈরি হয়। এবং অব্যাহতভাবে এই সমর্থকগোষ্ঠী ছড়িয়ে পড়ে এবং নতুন নতুন সমর্থক গোষ্ঠী তৈরি করে। পরিবারগুলোর সঙ্গে জনগণের বোঝাপড়ার সম্পর্কসূত্রও একইভাবে তৈরি হয়। একসময় তাদের জনপ্রিয়তা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে একে চ্যালেঞ্জ করার মতো রাজনীতি দাঁড় করানো খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। অভিজ্ঞতা বলছে, বিপদজনক পপুলিস্ট রাজনীতি ছাড়া পরিবারতন্ত্রের জন্য অন্য কিছু চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারছে না।
পাকিস্তানের ইমরান খান মুসলিম লীগ ও পিপলস পার্টির রাজনীতির বাইরে এসে যে জনপ্রিয় অবস্থান তৈরি করতে পেরেছিলেন তার প্রেক্ষাপট রচনা করেছিল আফগানিস্তানের যুদ্ধ এবং সেই যুদ্ধে পাকিস্তানের অবস্থান। স্বাভাবিকভাবেই পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ এই অবস্থান মেনে নিতে পারেনি। তাদের মধ্যে সামরিক বাহিনী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। সেই বিক্ষোভ থেকে পাকিস্তানের ক্ষমতা কাঠামোকে তাৎক্ষণিকভাবে রক্ষা করতেই ইমরান খানকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। মুসলিম সেন্টিমেন্ট ও ইসলামী আবেগকে ব্যবহার করে ইমরান খান জয়লাভ করতে পেরেছিলেন। ক্ষমতা কাঠামোও তাকে জয়লাভে সহযোগিতা করতে পেরেছিল।
ভারতেও আমরা দেখবো, বাবরি মসজিদ-কেন্দ্রিক দাঙ্গা, সংঘাত ও সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে বিজেপি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। প্রথমবারের মতো তারা ক্ষমতায় বসতে পেরেছিল। পরে গুজরাট দাঙ্গার প্রেক্ষাপটে নতুন হিন্দুত্ববাদী উত্থানের ফলে আবার তারা ক্ষমতার দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়। অবশেষে বিজেপি এবারের দুই মেয়াদের শাসন শেষ করতে যাচ্ছে।
দুই দেশের দুটি অভিজ্ঞতার কোনোটিই সুখকর নয়।
পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির অনেক সমালোচনাই আমরা করতে পারি। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব প্রকট। কিন্তু দীর্ঘদিনের চর্চার কারণে উপমহাদেশের মতো মতো অবিকশিত সমাজেও পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির কর্ণধাররা এক ধরনের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পক্ষে অবস্থান নেন। তারা নিজেরাই শাসক শ্রেণী, শাসক শ্রেণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত এবং দীর্ঘদিন বাইরের পুঁজি ও বাণিজ্য ব্যবস্থার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সম্পর্কিত থাকার কারণে বুর্জোয়া উদারনৈতিক রাজনীতির প্রতি আগ্রহী থাকেন। কখনো কখনো স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা দেখা দিলেও নিজেদের তৈরী সাপোর্টার বেজের কারণে টিকে থাকতে তাদের পপুলিস্ট দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দুই দলীয় ব্যবস্থার কারণে ভোটাররা একদলের ওপর বিরক্ত হলেই আরেক দল অনায়াসে জনসমর্থন পেয়ে যায়। একটা ভাল নির্বাচন ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে পারলে দুই দলীয় ব্যবস্থাটি এসব দেশের জন্য মোটামুটি কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে গণ্য হতে পারে।
সমর্থন টিকিয়ে রাখার জন্য তাদের কিছু ভণ্ডামি ও প্রতারণার আশ্রয় নিতে হলেও ভোটে জেতার জন্য বড় ধরনের ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরি করতে হয় না মুসলিম লীগ বা পাকিস্তান পিপলস পার্টি বা ভারতীয় ন্যাশনাল কংগ্রেসকে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও একই কথা খাটে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই দফায় প্রায় ১০ বছর জবরদস্তি করে ক্ষমতায় আছে। এই শাসনব্যবস্থায় পরিবারই সবার ওপরে গুরুত্ব পাচ্ছে। তাদের কর্তৃত্ববাদী শাসনের ওপর বিরক্ত হয়ে অনেকেই পরিবারতান্ত্রিক ব্যবস্থার অবসান ঘটানোর কথা বলছেন। বিদ্বৎ সমাজে এই প্রচেষ্টাকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করার একটা প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু বর্তমান আওয়ামী শাসনের নেতিবাচক দিকগুলোর জন্য শুধু পরিবারতন্ত্রকে দায়ী করা ঠিক হবে না। দ্বিদলীয় ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার প্রধান শর্তই হলো, নির্ধারিত মেয়াদের পর অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। এ চর্চাটা অব্যাহত থাকলে রাজনীতিতে ভাল প্রভাব পড়তে বাধ্য। কিন্তু নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে পরিবারতন্ত্রকে দায়ী করলে সেটি একদেশদর্শী পর্যবেক্ষণ হবে। একই সঙ্গে সেটা বিপদজনকও।
কেননা, বৃহত্তর রাজনৈতিক হিসাব নিকাশ ও ক্ষমতার রাজনীতি বিবেচনায় নিলে পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির বিকল্প পাকিস্তানে প্রধানত দুটি। ভারতে একটি।
পাকিস্তানের মতো দেশে সামরিক হস্তক্ষেপ ও ইসলামপন্থী জনতুষ্টিবাদী রাজনীতির উত্থান।
ভারতের মতো দেশে ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক উগ্র রাজনীতির উত্থান।
এছাড়া জনগণকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে একটি শাসনব্যবস্থার অধীনে রাখার আর কোনো উপায় উপমহাদেশে দেখা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশেও পরিবারতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদী বিকল্প খুঁজতে গেলে সেটি হয় বলপ্রয়োগমূলক হস্তক্ষেপে, নয়তো ইসলামিক রাজনীতির বিপুল উত্থানে পর্যবসিত হবে।
Discussion about this post