৮ নভেম্বর ‘বিএনপি নয়, দলটির নেতাদের ভোটে আনতে জোর তৎপরতা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে প্রথম আলো। এই সংবাদে আওয়ামী লীগ নেতারা বিশেষ রাখঢাক না করেই তাদের মনোভাব জানিয়ে দিয়েছেন। তারা চান, বিএনপি নেতারা দল ছেড়ে নতুন দলগুলোতে যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে যোগ দিক। কেউ কেউ এ বিষয়ে কথা বলার সময় নাম প্রকাশ করতে চাননি, কেউ কেউ করেছেন। কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগ বোধহয় বিষয়টি নিয়ে এখন আর খুব একটা রাখঢাক করতে চাইছে না।
৬ নভেম্বর তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ ঢাকায় দলের এক সমাবেশে বলেছেন, অনেকেই লাইন ধরে আছেন তৃণমূলে (তৃণমূল বিএনপি) যোগ দেওয়ার জন্য। আর বিএনপির সাবেক মন্ত্রী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজের নেতৃত্বে আরও একটি দল হতে যাচ্ছে। তাঁরা শিগগিরই ঢাকায় কনভেনশন করবেন। সুতরাং বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও নেতাদের অংশগ্রহণ ঠেকাতে পারবে না। (প্রথম আলো, ৭ নভেম্বর)
২৮ অক্টোবরের পর সরকারের দিক থেকে বিএনপি ভাঙ্গার একটি তৎপরতা শুরু হয়েছে, এমন আভাস ২/৩ নভেম্বরেই কেউ কেউ দিয়েছিলেন। কিন্তু ৬ তারিখের আগে বিষয়টি গুজব ও কানাঘুষার পর্যায়েই ছিল। তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নীতি-নির্ধারক হাছান মাহমুদ কথা বলার পর বিষয়টি নিয়ে জোরেশোরে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রায় সব সংবাদমাধ্যম এ নিয়ে সংবাদ ও পর্যালোচনা প্রকাশ করেছে।
সরকারের দিক থেকে এ ধরনের কোনো উদ্যোগ আসতে পারে এমন ধারণা আগে অনেকে জানিয়ে রেখেছিলেন। জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত ও নিয়মিত কর্মসূচিতে থাকা অনেক দলকে নিবন্ধন না দিয়ে নির্বাচন কমিশন তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম, বিএসপি, বিএনএফ-এর মতো দলগুলোকে নিবন্ধন দিলে এ সন্দেহ আরো জোরদার হয়। তখন সংবাদমাধ্যমগুলো এ দলগুলোর খোঁজ-খবর করতে গিয়ে দেখেছে, এগুলো নাম ও সাইনবোর্ড সর্বস্ব সংগঠন। কেন এমন দলগুলোকে নিবন্ধন দেওয়া হলো তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা নির্বাচন কমিশন দিতে পারেনি।
এখন বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে গেল। এই দলগুলো কেন গঠিত হয়েছে, নির্বাচন কমিশন কেন এগুলোকে নিবন্ধন দিয়েছে তা ধীরে ধীরে বোঝা যাচ্ছে।
সরকার এখন বিএনপিকে সর্বোচ্চ মাত্রার চাপে রাখার নীতি গ্রহণ করেছে। ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের আগেও বিএনপি যথেষ্ট চাপে ছিল। কিন্তু মহাসমাবেশ ভণ্ডুল করার পর সরকার ও পুলিশ যে মারমুখী অবস্থান গ্রহণ করেছে তা বোধহয় আগের যে কোনো চাপকে ছাড়িয়ে গেছে। এ সময়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য নতুন মামলা হয়েছে। প্রথম আলো জানাচ্ছে, এ সময় প্রায় আট হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইওরোপীয় ইউনিয়নের বিবৃতিতেও এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছে। অল্প দু’একজন শীর্ষ নেতা এখনও গা ঢাকা দিয়ে গ্রেপ্তার এড়িয়ে চলছেন। এমন একটি পরিস্থিতিতে দল ভেঙে নিষ্ক্রিয়, ছিটকে পড়া, বহিষ্কৃত ও বঞ্চিত নেতাদের নবগঠিত দলে ভেড়ানোর উদ্যোগ স্বাভাবিকভাবেই বেশ কৌতূহল তৈরি করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে এবং নবগঠিত দলগুলোর কর্তাব্যক্তিদের মুখ থেকে জানা যাচ্ছে, বিএনপি থেকে অনেক নেতা অন্য দলগুলোতে চলে যাওয়ার জন্য লাইন ধরেছেন। কারা যেতে পারেন তা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা ডানা মেলেছে।
এই জল্পনা, গুজব ও কানাঘুষা সরকারকে তাৎক্ষণিকভাবে ভাল সুবিধা দিচ্ছে। ভাঙন-প্রক্রিয়া কতটা সফল হবে তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও এর মাধ্যমে সরকার দুটি নগদ সুবিধা পাচ্ছে।
প্রথমত, মামলা-গ্রেপ্তারে জেরবার বিএনপিকে এর মাধ্যমে আরো বেশি চাপে ফেলা যাচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়নি বা যাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি তাদের দল বদলের প্রস্তাব দিয়ে কাবু করা যাচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, অনেক নেতাকে নিয়ে সন্দেহ তৈরি করা না গেলেও কোনো কোনো নেতাকে নিয়ে নিঃসন্দেহে সংশয় তৈরি হয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ নিয়ে সরাসরি কিছু বলা না হলেও দলটির অনেকে মনে করেন, দল ভাঙ্গার কথা স্রেফ গুজব ও ধাপ্পা। দলের ঐক্য ও সংহতি অটুট আছে। গত এক দশকে বিএনপি ভাঙ্গার অনেক চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, এখন নতুন করে এই চেষ্টা সফল হওয়ার কোনো কারণ নেই।
গঠনগত কারণেই বিএনপির মতো দল ভাঙ্গা কঠিন। আমরা সাম্প্রতিক ইতিহাসের নানা ঘটনাবলী পর্যালোচনা করলে দেখবো- শুধু বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগ ভাঙ্গাও খুব কঠিন।
প্রথমত, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুটোই পরিবারতান্ত্রিক দল। এ দুটি দলে বড় বড় অনেক নেতা ছিলেন ও আছেন। কিন্তু এ দল দুটির মালিকানা বা স্বত্ব মূলত নেতৃত্বদানকারী পরিবার দুটোরই। দেশব্যাপী এ দলদুটির যে সমর্থক বা কর্মী গোষ্ঠী সক্রিয় তারা মূলত উত্তরাধিকার সূত্রে অধিষ্ঠিত দলীয় প্রধানের নেতৃত্বই মেনে চলে। দলের অন্য নেতারা কখনোই এই নেতাদের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতাকে অতিক্রম করে যেতে পারেন না।
দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতির প্রধান ন্যারেটিভও পরিবার-কেন্দ্রিক। দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে শেখ পরিবার ও জিয়া পরিবারের অবদান, রাষ্ট্র পরিচালনায় পরিবার দুটির অবদান, পরবর্তী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পরিবারের উত্তরাধিকারীদের অবস্থান এই ন্যারেটিভ তৈরি করেছে। এ দুটি দলে পরিবারের বাইরের কোনো নেতাই সমান্তরাল কোনো ন্যারেটিভ তৈরি করতে পারেননি। তাজউদ্দীন আহমদের মতো নেতা প্যারালাল ন্যারেটিভ তৈরি করলেও সেটিকে স্থায়ী রূপ দিতে পারেননি। জনগণের সামনে নিজের অবদান তুলে ধরতেও পারেননি।
তৃতীয়ত, এই দুটি দলের নেতাদের অনেকের স্থানীয়ভাবে ভাল জনপ্রিয়তা থাকলেও জাতীয়ভাবে কার্যকর সমর্থক গোষ্ঠী অধিকাংশের নেই। এমনকি বেশিরভাগ নেতা দল বদল করে নতুন দল গড়ে তার নির্বাচনী এলাকার সমর্থক গোষ্টীকে পর্যন্ত নতুন দলে ভেড়াতে পারেননি। অর্থাৎ দল বদল করার মানে হলো, ব্যক্তি হিসেবে নেতার একার দল বদল। পরিবারের সদস্য, ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন ও একান্ত অনুগত অল্প লোকের বাইরে কেউ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বৃহৎ কর্মী-সমর্থক বাহিনী নিয়ে দল বদল করতে পেরেছেন এমন উদাহরণ আমাদের সামনে নেই। বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে ঠিক করতে গিয়ে, দলের নেতৃত্ব বদলাতে গিয়ে, প্রধান নেতাকে চ্যালেঞ্জ করতে গিয়ে অনেক বড় বড় নেতা জনগণের মন থেকে শুধু নয়, ইতিহাস থেকেই স্রেফ ভোজবাজির মতো উবে গিয়েছেন। এমন এক ডজন নাম সকলেরই জানা। এসব করতে গিয়ে কত নেতার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে গেছে তারও ইয়ত্তা নেই।
চতুর্থত, নতুন দল গড়ে নেতারা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পেরেছেন এমন উদাহরণও নেই। এমনকি, পরিবার থেকে আসা দলীয় প্রধানের অনুপস্থিতিতে বড় নেতারা সুশৃংখলভাবে দলকে নেতৃত্ব দিতে পারেন না। অন্তর্দলীয় কোন্দল এসব ক্ষেত্রে বেড়ে যায়, শেষ পর্যন্ত পরিবারের নেতৃত্বই এই কোন্দল প্রশমিত করতে পারে।
এই পর্যবেক্ষণগুলো মাথায় রাখলে এ কথা ভাবা খুব কঠিন যে, আওয়ামী লীগ থেকে কেউ শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করবেন এবং সেটি করে সফল হতে পারবেন। কিংবা বিএনপির কোনো নেতা খালেদা জিয়া বা তারেক রহমানের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জ করে সফল হতে পারবেন।
এমনকি দল থেকে বেরিয়ে গিয়ে নতুন দল গঠন করার একটি সফল উদাহরণ স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটিও নেই। এক ক্ষমতাসীন দল থেকে বেরিয়ে আরেক ক্ষমতাসীন দলে যোগ দেওয়ার উদাহরণ আছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ভেঙ্গে নতুন রাজনৈতিক ন্যারেটিভ এখনো তৈরি হয়নি। এটা প্রায় অসম্ভব।
যারা নতুন রাজনীতি করার জন্য দল গড়তে চান তাদের বরং উচিত একেবারে শূন্য থেকে শুরু করা। বিএনপি বা আওয়ামী লীগের ভেতরে থেকে অনেকেরই মনে হতে পারে তারা স্বস্তি বোধ করছেন না। পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি পছন্দ করছেন না। এক নেতা এক দলের রাজনীতি তাদের ভাল লাগছে না। শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে তাদের অনেক অভিযোগ। শীষ নেতা তাদের মূল্যায়ন করছেন না। তিনি যথেষ্ট গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দল চালাচ্ছেন না।
আওয়ামী লীগ-বিএনপির মতো বড় দলের শীর্ষ নেতারা সবার মন রক্ষা করে চলতে পারবেন না। দলে থেকে যারা যারা নেতা হয়েছেন, তারা যাদের নেতা বানিয়েছেন তারাও যে সবসময় তাদের কথা মেনে চলেন তাও তো নয়। ফলে দলছুট, বঞ্চিত নেতাদের চ্যালেঞ্চ সবসময়ই শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে মোকাবিলা করতে হয়। খালেদা জিয়ার অসুস্থতার সময় তারেক রহমানকেও এটি মোকাবিলা করতে হবে।
ক্ষমতাসীন অবস্থায় বিদ্রোহী, বঞ্চিত ও দলছুটদের নিয়ন্ত্রণে রাখা খানিকটা সহজ। ক্ষমতার বাইরে থাকলে কিছুটা কঠিন। বিএনপির বড় সফলতা হলো, ক্ষমতার বাইরে দীর্ঘসময় থাকার পরও দলটি বড় ভাঙনের মুখোমুখি হয়নি। সরকারের এ সংক্রান্ত চেষ্টগুলো সফল হয়নি।
এখন অবশ্য বাস্তবতা একটু আলাদা। সরকারকে নভেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করতে হবে। জানুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন করে ফেলতে হবে। এই নির্বাচনে জিততে হলে সরকারের সামনে দুটো অপশন।
এক, কোনো না কোনোভাবে কারচুপি করতে হবে। দুই, বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে হবে।
২৮ অক্টোবরের পর সরকারের মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে, সরকার বিএনপিকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বাইরে রেখেই ভোট সেরে ফেলতে চায়। আর সেটি করার জন্য বিএনপির দলছুটদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশকে নবগঠিত দলগুলোতে ভেড়াতে তারা বেশ তৎপর। তাতে অন্তত এটি দেখানো যাবে যে, বিএনপি না এলেও তাদের দলের একটি অংশ অন্য নাম দিয়ে নির্বাচনে এসেছে।
এই প্রক্রিয়ায় সফল হওয়া কত কঠিন সেটি আগে আলোচনা করেছি। আরেকটি বাস্তব সমস্যার কথা বলে শেষ করবো।
সেটি হলো, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলছুট বিএনপি নেতাদের কতটা আসন ছাড় দিতে পারবে?
নিজের ক্যাপাসিটিতে একতরফা ইলেকশন করতে পারলে আওয়ামী লীগ কেন অন্যদের মধ্যে বেশি সংখ্যক আসন বিতরণ করতে যাবে?
সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতাই বা হারাতে চাইবে কেন?
বরং, ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতোই তারা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ট দল হিসেবে সংসদে থাকতে চাইবে। অর্থাৎ নিজেদের জন্য ২০০ আসন রাখার পর ১৪ দলের জোটসঙ্গী, জাতীয় পার্টি, ছোট সম্ভাবনাময় দলগুলোর মধ্যে আসন বণ্টন করলে বিএনপির দলছুটদের ভাগে কতটি আসন পড়বে? আবারও একতরফা নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখলে আওয়ামী লীগের নেতারাই বা তাদের সংসদীয় আসন ছাড়তে চাইবেন কেন?
বিভিন্ন অসমর্থিত সূত্র বলে, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্যজোটের এক ধরনের বোঝাপড়া হয়েছিল। তাতে সম্ভবত ঐক্যজোটকে ১২০ আসনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঐক্যজোট মনে করেছিল, ১২০ আসন দেওয়ার বাস্তবতা নেই, বড় জোর ৭০ আসন দেওয়া হতে পারে। এটা মেনে নিয়েই তারা নির্বাচনী সরকার, নির্বাচনের স্বচ্ছতা ইত্যাদি নিয়ে খুব বেশি উচ্চবাচ্য করেনি। কিন্তু নির্বাচনের ফল আসার পর দেখা গেল, ৭০ তো দূরের কথা মাত্র ৭টি আসন দেওয়া হয়েছে।
আমার মনে হয়, এ কথাগুলো স্রেফ গুজব। কিন্তু এই গুজব মাথায় রেখে দলছুট নেতারা কত আসনের আশা করতে পারেন?
মূল বিএনপি ও ঐক্যজোট মিলে যদি ৭ আসন পায় তবে মায়ে খেদানো বাপে তাড়ানো দলগুলোর নেতারা শেষ পর্যন্ত কত আসন পাওয়ার আশা করতে পারেন?
ফলে, লাইন ধরে তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম, বিএসপি, বিএনএফ-এ কারা যাচ্ছেন?
Discussion about this post