১৬ অক্টোবর, ২০১৬
কূটনৈতিকভাবেও ব্রিকস বাংলাদেশের জন্য কোন ক্ষতির কারণ হবে না, উল্টো দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটাবে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন। তারা বলছেন, ভারত, রাশিয়া ও চীন বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র এবং ভালো বন্ধু। তাদের
কাছ থেকে ভালো কিছুই প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ।
ব্রিকস হলো পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র– ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং সাউথ আফ্রিকার আদ্যক্ষরের সমন্বয়ে নামকরণকৃত বিশ্ব অর্থনীতির একটি জোট। ২০০৯ সাল থেকে ব্রিকস রাষ্ট্রগুলো আনুষ্ঠানিক সম্মেলনে মিলিত হচ্ছে।
এবার ভারতের গোয়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে ব্রিকসের অষ্টম সম্মেলন। এ সম্মেলনকে ঘিরে ব্রিকস-বিমসটেক আউটরিচ সামিটে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ব্রিকস বাংলাদেশের জন্য অনুকূল কী অবস্থান সৃষ্টি করবে জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: ব্রিকসের সঙ্গে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুবিধাজনক লাভের কথা হচ্ছে অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি ও পারস্পরিক সহযোগিতা।
এর মাধ্যমে বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে বলে মনে করছেন কৃষি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ইব্রাহীম খালেদ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী জনসংখ্যা, আয়তন এবং অর্থনৈতিক আকারের দিক থেকে বর্তমান বিশ্বের একটি বড় শক্তি ব্রিকস। এ দেশগুলোতে আছে বিশ্বের ৪০ শতাংশ জনসংখ্যা এবং ২৫ শতাংশ এলাকা এবং বৈশ্বিক জিডিপি’র প্রায় ২৫ শতাংশও এ দেশগুলোর। এমনকি বর্তমানে ব্রিকস সম্মিলিতভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ৪৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। বিশ্বের যত পণ্যসেবা উৎপাদন হয় তার ২১ শতাংশ আসে এই পাঁচটি দেশ থেকে।
ব্রিকস ব্যাংক যদি তার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সফল হয় তাহলে তা বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ’র বিকল্প হতে পারে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন: বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্য না, তবে ব্রিকস একটি মাল্টিন্যাশনাল এজেন্সি। বাংলাদেশ যদি অন্যান্য দেশগুলোর মতো ব্রিকসের শেয়ার হোল্ডার বা স্পন্সর শেয়ার মেম্বার হতে পারে তাহলেও বাংলাদেশ লাভবান হবে। ‘এছাড়াও বাংলাদেশের ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি ও ইকোনমিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন সহজ হবে।’
অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ২০১৫ সালে চীনের নেতৃত্বে এশিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ব্যাংক (এআইআইবি) প্রতিষ্ঠার পর ওই বছর জুলাই মাসে ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রিকসের পাঁচ অগ্রসরমান রাষ্ট্রের অর্থশক্তির যৌথ প্রচেষ্টায় গঠিত হয়েছে এই ব্যাংক।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবকাঠামো বিনির্মানে এই ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বিশ্বব্যাংক, আই এম এফ-এর মতো ব্রিকস ব্যাংকও ঋণ দেবে ।
বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারত এবং চীন দুই দেশই ব্রিকসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র হওয়ায় ব্রিকস কার্যক্রমে বাইরে থেকে কিংবা অন্য কোনভাবে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ কূটনৈতিকভাবেও নেতিবাচক কিছু বয়ে আনবে না বলে মনে করেন অধ্যাপক আবু আহমেদ এবং খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তারা বলেছেন, সম্মেলনে অংশ নিলে কখনোই কোন দেশের ক্ষতি হয় না।
সূত্র : চ্যানেল আই অনলাইন
১৭ ডিসেম্বর, ২০২০
শেখ হাসিনাকে বিশ্বের পাঁচ বৃহৎ উদীয়মান অর্থনীতির জোট ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে (এনডিবি) যোগ দেয়ার আহ্বান জানান মোদি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার এ প্রস্তাবে রাজি। কারণ, বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে প্রচুর বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে।
ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সড়কে বাংলাদেশকে যুক্ত করতে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল সম্মেলনে মোদি এ প্রতিশ্রুতি দেন।
সম্মেলনে বাংলাদেশকে ব্রিকসের ব্যাংকে যোগ দিতে নরেন্দ্র মোদি অনুরোধ জানালে তাতে সম্মতি দেন শেখ হাসিনা।
সূত্র : নিউজ বাংলা
১৪ জুন, ২০২৩
আগামী আগস্টে বাংলাদেশ ব্রিকস এর সদস্য হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।
বুধবার (১৪ জুন) জেনেভার প্যালেইস ডি ন্যাশন্স-এ সফররত সাউফ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট মাতামেলা সাইরিল রামাপোসা এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করেন। এ বিষয়ে ব্রিফকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেন, তারা (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা) যে ব্রিকস ব্যাংকটা করেছে সম্প্রতি আমাদের গেস্ট হিসেবে দাওয়াত দিয়েছিল। আগামীতে তারা ব্রিকস এ আমাদের সদস্য করবে, অগাস্ট মাসে ওদের সম্মেলন হবে। প্রধানমন্ত্রী ইনশাল্লাহ সেখানে যাবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ব্রিকস এ এখন পাঁচটি সদস্য। আগামীতে তারা আরও আটটি দেশকে সদস্য করবে। তার মধ্যে বাংলাদেশ, সৌদি আরব, ইউনাইটেড আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়াকে তারা দাওয়াত দিয়েছে।
ব্রিকস-এ যোগদানের সুবিধার কথা তুলে ধরে মোমেন বলেন, এটা আমাদের অর্থায়নের আরেকটি ক্ষেত্র হবে। আমাদের তো টাকা-পয়সা দরকার। সেদিক থেকে এটি ভালো হবে।
সূত্র : যমুনা টিভি
১৬ জুন, ২০২৩
ব্রিকস একটি বহুজাতিক সংস্থা। এই জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভৌগলিক নৈকট্য, অর্থনৈতিক কাঠামো বা সাংস্কৃতিতে বড় ধরণের ফারাক আছে। প্রতিবেশী হলেও চীন ও ভারতের সম্পর্কও বেশ জটিল।
“এই জোটের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা হল তাদের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু জোটের সব দেশগুলোর মধ্যে কতটা ঐক্যমত্য রয়েছে তা খুব জরুরি। বিশেষ করে নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেন বা নিজস্ব রিজার্ভের মতো সিদ্ধান্ত নিতে গেলে সবার মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। না হলে সেগুলো কেবল প্রস্তাবনা আকারেই পড়ে থাকবে,” বলেন সায়মা হক বিদিশা।
চীন ও রাশিয়ার জোটে যোগ দিলে পশ্চিমাদের রোষানলে পড়ার ঝুঁকি কতটা থাকবে বাংলাদেশের ?
সায়মা হক বিদিশা মনে করেন নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় এখন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ যদি এই রাষ্ট্রগুলোর সাথে সম্পৃক্ত হয় সেটা পশ্চিমাদের চাওয়ার বিপরীতমুখী হতে পারে। আবার রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধও একটা বিষয়। কিছুটা টেনশন তো থাকবেই। কিন্তু ধারণার ওপর ভিত্তি করে এখনই কিছু বলা ঠিক হবে না। হয়তো জোটভুক্ত হলেও পশ্চিমা দেশগুলো সুসম্পর্ক বজায় রাখবে।”
এ বিষয়ে আবু আহমেদ জানান, বাংলাদেশ বাজার মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ নির্ভর। বিনিয়োগও ওইসব দেশ থেকেই বেশি আসে। তাই জোটে যোগ দিলে বাংলাদেশের অর্থনীতি পশ্চিমাদের চাপে পড়তে পারে।
যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে লাভক্ষতির হিসাবটা সরকার যেন ঠিক মতো করে নেন – পরামর্শ আবু আহমেদের।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
১৯ জুন, ২০২৩
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক জোট ব্রিকস আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানালে বাংলাদেশ স্বাগত জানিয়ে এতে যোগ দেবে।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার জোটটিতে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা আমাদের আমন্ত্রণ জানালে অবশ্যই যোগ দেব আমরা। এখনও আমরা কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি পাইনি।’
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশসহ প্রায় আটটি নতুন দেশকে উদীয়মান অর্থনীতিতে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন ব্রিকস নেতারা।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব, ইউএই, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশসহ প্রায় আটটি নতুন দেশকে উদীয়মান অর্থনীতিতে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন ব্রিকস নেতারা।’
এর আগে জেনেভায় মোমেন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, বাংলাদেশ চলতি বছরের আগস্টে ব্রিকসের সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় আগামী ২২-২৪ আগস্ট ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে ব্রিকস নেতারা যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। জোহানেসবার্গের গৌতেংয়ের স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে (এসসিসি) শীর্ষ সম্মেলনটি হওয়ার কথা রয়েছে।
সূত্র : সমকাল
২০ জুন, ২০২৩
ব্রিকসে যোগ দিলে বাংলাদেশ বেশ কিছু সুবিধা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সুবিধাগুলো হলো:
১. ব্রিকস জোটের সদস্য হওয়ার পর বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশ ঋণ নেওয়ার সুবিধা পাবে। এ ক্ষেত্রে ঋণের সুদের হারও কম হবে।
২. ব্রিকস জোটের সদস্যদের সাথে সম্পর্ক বাড়বে। এ ক্ষেত্রে সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়বে।
৩. ব্রিকস জোটে যোগ দিলে বৈশ্বিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্ত হবে।
৪. ব্রিকস জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভবিষ্যতে বিকল্প মুদ্রা বা বিকল্প বাণিজ্যিক ব্যবস্থা চালু করলে এ ক্ষেত্রে সুবিধা নিতে পারবে বাংলাদেশ।
৫. ব্রিকস ভবিষ্যতে আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান হতে পারে। এ ক্ষেত্রে বড় আকারের ঋণ সুবিধা পেতে পারে বাংলাদেশ।
সূত্র : বাংলা নিউজ
২১ জুন, ২০২৩
বাংলাদেশে কেন ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার সমন্বয়ে গঠিত ব্রিকস জোটে যোগ দিতে চায়, সেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলছেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এককভাবে কারো ওপর যেন নির্ভরশীল থাকতে না হয়, সেজন্যেই ব্রিকসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সুইজারল্যান্ড সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে বুধবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরের অন্যান্য বিষয়ের মত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার সঙ্গে বৈঠকের কথাও তিনি তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্রিকস জোটের বর্তমান চেয়ার দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে তিনি ব্রিকস জোটে বাংলাদেশের যোগ দেওয়ার আগ্রহের কথা জানান।
সিরিল রামাফোসা তখন বলেন, অগাস্টে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠেয় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে জোটের সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরে সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নোত্তর পর্বে একজন সাংবাদিক জানতে চান, ইউক্রেইন-রাশিয়া যুদ্ধের বাস্তবতায় যে অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে, সেই সময়ে ব্রিকসে যোগ দিলে কোনো সুবিধা বাংলাদেশের হবে কি না।
উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ব্রিকসে আমরা যোগ দেব এই কারণে, ব্রিকস প্রথম যখন এটার প্রস্তুতি নেয়, তখন থেকেই আমরা এর সঙ্গে ছিলাম এবং আছি। কিন্তু আমরা ফাউন্ডার মেম্বার হতে পারিনি। এখন আমরা চেয়েছি সেটার মেম্বার হতে।
“আমরা চাচ্ছি যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোনো একটার ওপর যেন নির্ভরশীলতা না হয়। কাজেই অন্যান্য দেশের সঙ্গেও যেন আমাদের অর্থ বিনিময়ের সুযোগটা থাকে। আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো যেন আমরা সহজে ক্রয় করতে পারি, আমার দেশের মানুষের কষ্ট লাঘব করতে পারি। সেই সমস্ত বিষয় বিবেচনায় করেই কিন্তু আমরা ব্রিকসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
সূত্র : বিডিনিউজ
২৩ আগস্ট, ২০২৩
এই মুহূর্তে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে চলছে ‘ব্রিকস’ অর্থনৈতিক জোটের শীর্ষ সম্মেলন, যেখানে জোটের সম্প্রসারণ ইস্যুটি একটি প্রধান আলোচ্য বিষয় হিসেবে দেখা দিয়েছে। আয়োজক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার বিশেষ আমন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত রাতেই (মঙ্গলবার) জোহানেসবার্গে গিয়ে পৌঁছেছেন। জোটের অন্যতম শরিক ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও সেখানেই রয়েছেন। কিন্তু ব্রিকসে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব নিয়ে ভারত ঠিক কী অবস্থান নিচ্ছে তা এখনও স্পষ্ট করা হয়নি। জোটের নতুন সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের প্রার্থিতাকে ভারত সমর্থন করছে কিনা, সোমবার দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনেও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াটরা এ প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন।
তবে দিল্লিতে ভারতের একাধিক পর্যবেক্ষক ও পররাষ্ট্রনীতির বিশেষজ্ঞ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ভারত যে বাংলাদেশের প্রার্থিতার বিরোধিতা করছে বিষয়টা মোটেও তেমন নয়। কিন্তু ব্রিকসের সম্প্রসারণের নামে চীন এই জোটে নিজেদের পাল্লাভারী করার চেষ্টা চালাচ্ছে– এই আশঙ্কাটাই ভারতকে কিছুটা সতর্ক ও সন্দিগ্ধ রেখেছে।
অর্থাৎ, নতুন সদস্যদের নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত যে বেশ সাবধানে পা ফেলতে চাইছে সেটা ব্রিকসে যোগদানে ইচ্ছুক সব নতুন দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য– বাংলাদেশের জন্য আলাদাভাবে কিছু নয়।
আনুষ্ঠানিকভাবেও ভারত গত সপ্তাহেই ঘোষণা করেছে, তারা মোটেই ব্রিকস সম্প্রসারণের বিরোধী নয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেছেন, ‘বরং আমরা নতুন সদস্য নেওয়ার বিষয়টিকে খোলা মনে, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতেই দেখছি। কিন্তু এই যোগদানের ক্রাইটেরিয়া বা মাপকাঠি কী হবে, সেটা নিয়ে আগে আলোচনা করা দরকার।’
দিল্লিতে স্ট্র্যাটেজিক থিংকট্যাংক অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনে (ওআরএফ) ফরেন পলিসি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হর্ষ ভি পন্থও মনে করেন, ব্রিকসে ভারতের সমস্যাটা জোটের আর এক প্রতিষ্ঠাতা সদস্য চীনকে নিয়ে, বাংলাদেশকে নিয়ে নয়।
বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলছিলেন, ‘চীন আসলে বেশ কিছুদিন ধরেই ব্রিকসকে একটা পাশ্চাত্যবিরোধী ওরিয়েন্টেশন দিতে চাইছে। ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে কোণঠাসা রাশিয়াও সেই সুরেই সুর মেলাচ্ছে। কিন্তু সঙ্গত কারণেই ভারত বা ব্রাজিলের পক্ষে তাতে তাল দেওয়া সম্ভব নয়। তাছাড়া ভারত নিজে কোয়াডের সদস্য (অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারত— এই চার দেশের নিরাপত্তা বিষয়ক জোট) সেটাও মনে রাখতে হবে। তাই দিল্লি দুটোর মধ্যে একটা ভারসাম্য রেখেই চলতে চেষ্টা করবে।’
অধ্যাপক পন্থ আরও মনে করেন, ব্রিকস জোটে যাবতীয় সিদ্ধান্ত যেহেতু সদস্যদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে হয়, তাই কোনও নতুন দেশের অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে বর্তমান পাঁচ সদস্য একমত না হলে তাদের নামে সিলমোহর পড়াটা কঠিন।
“এদিক থেকে আমি বলবো পাঁচটি দেশ নতুন সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে ‘ফ্রন্টরানার’, বা দৌড়ে এগিয়ে আছে – আর এগুলো হলো সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, মিশর ও আর্জেন্টিনা। বাংলাদেশ এখানে ঠিক এর পরের সারিতে আসবে বলেই আমার ধারণা” আরও জানাচ্ছেন তিনি।
দিল্লির আর একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড ইনফর্মেশন সিস্টেমের (আরআইএস) ফরেন ডেভেলপিং কান্ট্রিজের অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ প্রবীর দে-র কিন্তু বলতে দ্বিধা নেই, ব্রিকসে বাংলাদেশের যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশকে ভারত অবশ্যই স্বাগত জানাচ্ছে।
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
২৪ আগস্ট, ২০২৩
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলছেন সম্প্রসারনের বিষয়টি কয়েক ধাপে আলোচনা হয়েছে।
“কোন সূচকের ভিত্তিতে নতুন সদস্য নেয়া হবে কি-না কিংবা কীভাবে গ্রহণ করা হবে। এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে অর্থনীতির আকার ও জাতীয় মাথাপিছু আয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তাই বলা যায় নতুন সদস্য নেয়ার ক্ষেত্রে পুরোপুরি ঐক্যমত না থাকলে একটি মাপকাঠি ছিলো,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
মি. ভট্টাচার্য যে দুটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন এ দুটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের চেয়ে ইথিওপিয়া ছাড়া অন্যদেশগুলো, অর্থাৎ যাদের সদস্যপদ দেয়া হয়েছে তারা এগিয়ে।
বাংলাদেশের বাদ পড়াটাকে কূটনৈতিক ব্যর্থতা হিসেবে দেখতে চান না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. নিলয় রঞ্জন বিশ্বাসও। তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিজে থেকে এখানে আগ্রহ দেখিয়েছে বিষয়টি সেরকম নয়। বরং বাংলাদেশকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং সেখানে বাংলাদেশ ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে।
“সেই কনটেক্সটে এটাকে ঠিক এখনই ফেইলিয়র বলাটা, অত্যুক্তি করা হয়ে যাবে। আরেকটু বোধ হয় এটা অ্যানালিসিস করতে হবে। ”
বাংলাদেশের বাদ পড়ার পেছনে এখনই কোন কারণ বোঝা সম্ভব নয় বলেও মনে করেন মি. বিশ্বাস। তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখনই কোন মন্তব্য করার সময় আসেনি।
তবে যেসব দেশকে ব্রিকসে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সেগুলো বিশ্লেষণ করার মতো বলে মনে করেন তিনি।
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, চীন যেসব দেশে সমস্যা মেটাতে মধ্যস্থতা করেছে সেসব দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যেমন সৌদি আরব এবং ইরান। আবার ইথিওপিয়াতে চীনের বড় বিনিয়োগ রয়েছে।
এছাড়া আঞ্চলিক একটা ভারসাম্যও মাথায় রাখা হয়ে থাকতে পারে বলেও মনে করেন তিনি। যেমন, ছয়টি দেশের মধ্যে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ আমেরিকা- সব এলাকার দেশই রয়েছে।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
২৭ আগস্ট, ২০২৩
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষার জন্যই বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্য হতে পারেনি। তবে এ নিয়ে আশাহত হবার কিছু নেই।
রোববার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপে তিনি এসব কথা বলেন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ব্রিকসে সদস্য হতে চিঠি দিয়েছিলাম। ব্রিকসের সাথে সক্রিয়ভাবে আমরা আছি। ৬ দেশের মধ্যে নেই। তবে বেনিফিটের জায়গায় আমরা আছি। নেক্সট ফেজে থাকব। আমরাও সময় পেলাম।
মাসুদ বিন মোমেন আরও জানান, রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক ইস্যু আছে। ব্যালেন্সের ব্যাপারও আছে। আমাদের আশপাশের দেশ অনগোয়িং প্রসেস।
সদস্য না হওয়ায় আশাহত হওয়ার কিছু নাই।
সূত্র : মানবজমিন
Discussion about this post